মনুস্মৃতি: অধ্যায় এক শ্লোক সংখ্যা ১ এবং ২
অনুবাদ:
একাগ্রচিত্তে উপবিষ্ট মনুর নিকট মহর্ষিগণ উপস্থিত হয়ে তাঁকে যথাবিধি পূজা (সম্মানিত) করে এই কথা বললেন। হে ভগবন, সকল বর্ণের (ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র) এবং তাদের অন্তরপ্রসূত/অন্তর থেকে উৎপন্ন বিষয়গুলির (বা ধর্মের) বর্ণসমূহের' ধর্ম যথাক্রমে আমাদের সেই ধর্মগুলি যথাযথভাবে ও সঠিক ক্রমে আপনি বলার যোগ্য।
ব্যাখ্যা:
এখানে বলা হয়েছে, মনু একাগ্র চিত্তে বসে ছিলেন। মহর্ষিগণ তাঁর কাছে গিয়ে সকল বর্ণের আন্তরিক ধর্ম সম্পর্কে জানতে চাইলেন। কারণ তিনিই যথাযথভাবে বর্ণের উৎপত্তি সম্পর্কে জানেন। অর্থাৎ এই জাতি বা বর্ণ ভেদ মনু কর্তৃক নির্ধারিত নয়।
আবার, মনুস্মৃতির এই শ্লোক গুলো থেকে আমরা জানতে পারি যে, এই শ্লোক মনুস্মৃতির বর্ণনাকারীর কণ্ঠে লেখা। এখানে মনু নিজে মনুস্মৃতি রচনা করছেন না। বরং বলা হচ্ছে যে, ঋষিরা মনুর কাছে গেলেন, পূজা করলেন, এবং প্রশ্ন করলেন।
সুতরাং, এই মনুস্মৃতি মনুর বক্তব্যের স্মৃতি। এটি একটি সংলাপ ও তথ্য মূলক বর্ণনা, যেটি অপর এক ব্যক্তি বা কোনও বর্ণনাকারী আমাদের শোনাচ্ছেন। আবার বলা হয় যে পরবর্তী সময়ে মনিস্মৃতির অর্থের অনর্থ করে বিভিন্ন অপভ্রংশ করা হয়েছে। যেমন একজায়গায় বলা হয়েছে
“ভগবন্ সর্বধর্মানাং যথাবদনু পুরুষঃ।” আবার, আরেক জায়গায় এই একই শ্লোক লেখা হয়েছে “ভগবন্ সর্ববর্ণানাং যথাবদনুপূর্বশঃ।” এরকম বহু শ্লোক আছে যা প্রসঙ্গ ছাড়া মাঝখানে ঢুকে গেছে। তাই স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে বহু কাল ধরে এই অপব্যাখ্যা গুলোই সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করেছে।
Comments
Post a Comment