Posts

Showing posts from July, 2025

মনুস্মৃতি অধ্যায় এক শ্লোক সংখ্যা ৭ থেকে ৯

Image
    যোঽসাবতীন্দ্রিয়গ্রাহ্যঃ সূক্ষ্মোঽব্যক্তঃ সনাতনঃ।  সর্বভূতময়োঽচিন্তাঃ স এব স্বয়মুদ্বভৌ ॥ সোঽভিধ্যায় শরীরাৎ স্বাৎ সিস্কক্ষুবিবিধাঃ প্রজাঃ। অপ এব সসর্জাদে তাষ্পু বীজমবাস্তজহ, ॥ ত দন্ডমভবদ্ধৈমং সহআংশুসমপ্রভমূ ।  তস্মিন্‌ যজ্ঞে  স্বয়ং ব্রহ্মা সর্ব্বলোকপিতামহঃ ॥ (মনু ১.৭- ৯) অনুবাদ  যিনি ইন্দ্রিয়ের অতীত, সূক্ষ্ম, অব্যক্ত, চিরন্তন এবং সমস্ত জীবের মধ্যে বিরাজমান, সেই অচিন্তনীয় সত্তা নিজেই প্রকাশিত হলেন। তিনি প্রজা সৃষ্টির ইচ্ছায় নিজের শরীর থেকে জল সৃষ্টি করলেন এবং সেই জলে বীজ নিক্ষেপ করলেন। সেই উজ্জ্বল অণ্ড (ব্রহ্মাণ্ড) উৎপন্ন হল, যা সূর্যকিরণসম উজ্জ্বল। সেই অণ্ডেই স্বয়ং ব্রহ্মা, সমস্ত লোকের পিতামহ, অবস্থান করলেন। ব্যাখ্যা  ব্রহ্মাণ্ডের শুরুতে একটি অভৌতিক (non-material), অচিন্তনীয় সত্তা ছিলেন। যাহাকে আমরা পর ব্রহ্ম বলি।  সেই ব্রহ্ম নিজেকে অবর ব্রহ্ম (সাকার ব্রহ্ম) রূপে প্রকট করেছেন। সেই সাকার ব্রহ্মের স্বেদ থেকে একটি সমুদ্র তৈরী হলো, অর্থাৎ সৃষ্টির প্রথম জল প্রকট করলেন। সেই জলে  “বীজ” নিক্ষেপের অর্থ সৃষ্টির প্রাণশক্তি বা চেতনা সঞ্চার কর...

মনুস্মৃতি অধ্যায় এক শ্লোক সংখ্যা ৩ থেকে ৬

Image
  ত্বমেকো হাস্য সর্বস্য বিধানস্য স্বয়ম্ভবঃ।  অচিন্ত্যস্যাপ্রমেয়স্য কার্যতত্ত্বার্থবিৎ প্রভো॥ স তৈঃ পৃষ্টস্তথা সম্যগমিতৌজা মহাত্মভিঃ। প্রত্যুবাচার্চা তান্ সর্বান মহর্ষীন্ শূয়তামিতি ॥ আসীদিদং তমোভূতম প্রজ্ঞা তমলক্ষণম্।  অপ্রতক্যমবিজ্ঞেয়ং প্রসুপ্তমিব সর্বতঃ ॥ ততঃ স্বয়ম্ভুর্ভগবানব্যক্তো ব্যঞ্জয়ন্মিদম্।  মহাভূতাদিবৃত্তৌজাঃ প্রাদুরাসীত্তমোনুদঃ ॥ (মনু ১ / ৩-৬) অনুবাদ : হে প্রভু, ব্রহ্মের সকল অচিন্তনীয় ও অপরিমেয় বিধানের কার্য ও তত্ত্ব সম্বন্ধে একমাত্র আপনিই জানেন। অপরিমিত তেজ সম্পন্ন মহাত্মা মনু সেই সকল মহর্ষি গণের নিকট সম্যক ভাবে জিজ্ঞাসিত হয়ে তাঁদের সংবর্ধনা জ্ঞাপন করে বললেন, "তবে শুনুন: “এই জগৎ একসময় অজ্ঞাত, চিহ্ন বা লক্ষণ হীন, যুক্তির দ্বারা অনুধাবন যোগ্য নয় এমন একটি ঘোর অন্ধকারে আচ্ছন্ন ছিল। সব কিছু যেন নিদ্রিত অবস্থায় ছিল। তখন তমস্ দূরকারী, সয়ম্ভু ভগবান, ইন্দ্রিয়ের অগোচর, অপ্রকাশিত, ইন্দ্রিয় অগোচর  মহাভূত (পঞ্চভূত) প্রভৃতি বৃত্তিত সকল প্রকট করে অর্থাৎ বিশ্ব-উপাদান গুলো প্রকাশ করতে করতে, আবির্ভূত হলেন। ব্যাখ্যা : মনু সহ অন্যান্য মহান ঋষিরা ব্রহ্মার পুত...

মনুস্মৃতি: অধ্যায় এক শ্লোক সংখ্যা ১ এবং ২

Image
    মনুমেকাগ্রমাসী নমভিগম্য মহর্ষয়ঃ। প্রতিপূজ্য যথান্যায়ম ইদং বচনমব্রুবন্ ॥ ভগবন্ সর্ববর্ণানাং যথাবদনু পূর্বশঃ ।  অন্তরপ্রভবাণাঞ্চ ধর্মান্ নো বক্তুমর্হসি॥ (মনু ১ / ১-২) অনুবাদ :  একাগ্রচিত্তে উপবিষ্ট মনুর নিকট মহর্ষিগণ উপস্থিত হয়ে তাঁকে যথাবিধি পূজা (সম্মানিত) করে এই কথা বললেন। হে ভগবন, সকল বর্ণের (ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র) এবং তাদের অন্তরপ্রসূত/অন্তর থেকে উৎপন্ন বিষয়গুলির (বা ধর্মের) বর্ণসমূহের' ধর্ম যথাক্রমে আমাদের সেই ধর্মগুলি  যথাযথভাবে ও সঠিক ক্রমে আপনি বলার যোগ্য। ব্যাখ্যা :  এখানে বলা হয়েছে, মনু একাগ্র চিত্তে বসে ছিলেন। মহর্ষিগণ তাঁর কাছে গিয়ে সকল বর্ণের আন্তরিক ধর্ম সম্পর্কে জানতে চাইলেন। কারণ তিনিই যথাযথভাবে বর্ণের উৎপত্তি সম্পর্কে জানেন। অর্থাৎ এই জাতি বা বর্ণ ভেদ মনু কর্তৃক নির্ধারিত নয়।  আবার, মনুস্মৃতির এই শ্লোক গুলো থেকে আমরা জানতে পারি যে, এই শ্লোক মনুস্মৃতির বর্ণনাকারীর কণ্ঠে লেখা। এখানে মনু নিজে  মনুস্মৃতি রচনা করছেন না। বরং বলা হচ্ছে যে, ঋষিরা মনুর কাছে গেলেন, পূজা করলেন, এবং প্রশ্ন করলেন। সুতরাং, এই মনুস্মৃতি মনুর ...